ডিজিটাল মার্কেটিং কি? ডিজিটাল মার্কেটিং এখন খুবই জনপ্রিয়। ডিজিটাল মার্কেটিং এর গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে আমাদের সবাই জানা উচিত। সহজ ভাষায় বলতে গেলে, ডিজিটাল মার্কেটিং হল ইন্টারনেট, মোবাইল ফোন বা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে মানুষের কাছে পণ্য বা সেবা সম্পর্কে জানান দেওয়া। বর্তমানে আমরা প্রায় সকল দিক থেকেই অনলাইন নির্ভর হয়ে গেছি। আর ডিজিটাল মার্কেটিং অনলাইনের সাথে এমন ভাবে জড়িত ,ঠিক যেমন দেহের সাথে মাথা।
সূচিপত্র
ডিজিটাল মার্কেটিং কি
এখন অনেকেরই মনে প্রশ্ন জাগে ডিজিটাল মার্কেটিং কি? যদি সহজে বলতে চাই, ডিজিটাল মার্কেটিং হলো আধুনিক যুগের সর্বাধুনিক যোগাযোগ প্রযুক্তি, বিশেষ করে ইন্টারনেট ব্যবহার করে কোন পণ্য বা সেবার প্রচার কাজ চালানো। বিশ্বব্যাপী মানুষ বেশিরভাগ সময় ব্যয় করে অনলাইনে। এই বিপুল সংখ্যক মানুষের সামনে আপনার পণ্য বা সেবা সম্পর্কে জানান দেওয়ার কার্যকারী পদ্ধতিই হচ্ছে ডিজিটাল মার্কেটিং। শুধু যে ব্যবসার জন্যই ডিজিটাল মার্কেটিং করতে হয় তা নয়।
বর্তমান যুগে যেকোনো সেবা প্রদান বা কোন ধরনের নতুন কিছু শুরু করলে তা প্রচার করতে হয়। যেমন ধরুন টেলিভিশন দেখার সময়, মোবাইলে গেইম খেলার সময়, সোশ্যাল মিডিয়া তে থাকার সময়ে যেসব অ্যাডদেখে থাকি এগুলোই ডিজিটাল মার্কেটিং এর অংশ। এই ডিজিটাল যুগে নিজেকে এবং নিজের ব্যবসাকে টিকিয়ে রাখতে হলে ডিজিটাল মার্কেটিং এর কোন বিকল্প নেই। তাহলে বোঝা যাচ্ছে যে, এই যুগে ডিজিটাল মার্কেটিং কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
ডিজিটাল মার্কেটিং এবং এনালগ মার্কেটিং এর মধ্যে পার্থক্য
ডিজিটাল মার্কেটিং কে সঠিকভাবে উপলব্ধি করতে হলে প্রথমে এনালগ মার্কেটিং কে একটু বুঝতে হবে। যেমন আগের দিনে কোন ব্যবসায়ী তার পণ্যগুলো দোকানে সাজিয়ে রাখতো যাতে করে ক্রেতারা সেই পণ্যগুলো সম্পর্কে জানতে পারে। আবার নির্বাচনের সময় দেখা যেত প্রার্থীরা ভোটারদের বাড়ি বাড়ি স্বয়ং উপস্থিত হয়ে প্রচার কাজ চালাতো। প্রার্থীরা নিজে হাজির হয়ে নিজের সংগঠন সম্পর্কে লোকদের জানান দিত। এতে করে ওয়ান টু ওয়ান সম্পর্কটা ভালোভাবে গড়ে উঠত।
এনালগ মার্কেটিং টা ঠিক এরকমই। এর মাধ্যমে প্রচার প্রসারের কাজ খুবই কঠিন ছিল। অন্যদিকে, ডিজিটাল মার্কেটিং এর ব্যাপারটা পুরাই উল্টো। সোশ্যাল মিডিয়াতে কোন বিষয় সম্পর্কে একটা পোস্ট দিলে মুহূর্তের মধ্যেই তা হাজার থেকে লক্ষ মানুষের কাছে পৌঁছে যায়। অথচ এনালগ মার্কেটিং এ লক্ষ তো দূরের কথা হাজার লোকের কাছে প্রচারণা চালাতে বছর কি বছর সময় লেগে যেতো। এনালগ মারকেটিং এ একজনের মাধ্যমে আরো পাঁচজন এবং পাঁচজন থেকে আরও দশ জনের সম্পর্ক তৈরি করা হতো।
নির্বাচনী প্রচারণা বা নতুন কোন সিনেমার প্রচারের জন্য দেয়ালে লেখালেখি, পোস্টারিং, মাইকিং, খবরের কাগজেও ছাপা হতো। এ সবকিছুই এনালগ মার্কেটিং। এনালগ মার্কেটিং এ খাটুনিটাও বেশি। সাথে আর্থিক ব্যায়, সময় অপচয় ও বেশি হয়। আপনি হয়ত ভাবতে পারেন ডিজিটাল মার্কেটিং কি তাহলে এনালগ মার্কেটিংকে অচল করে দিয়েছে? কিন্তু আসলে তা নয়, পুরাতন মার্কেটিং কে আরো বেশি সহজ ও শক্তিশালী করেছে ডিজিটাল মার্কেটিং। ডিজিটাল মার্কেটিং এর বদৌলতে আমরা ঘরে বসেই খুব কম সময়ে এবং কম পরিশ্রমে বিভিন্ন পণ্য বা সেবা সম্পর্কে জানতে পারছি এবং ক্রয়-বিক্রয় ও করতে পারছি।
ডিজিটাল মার্কেটিং এর গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা
ডিজিটাল মার্কেটিং যেকোনো ধরনের উদ্যোগ বা ব্যবসার প্রচার প্রসারের জন্য অপরিহার্য। যুগের সাথে মার্কেটিং এর পদ্ধতি ও বদলে গেছে। ডিজিটাল যুগে চাই ডিজিটাল মার্কেটিং। মানুষ এখন যে কোন পন্য কেনার আগে ইন্টারনেটে ওই পণ্য সম্পর্কে ভালো করে জেনে বুঝে তারপর ক্রয় করে। তাছাড়া মানুষ এখন দোকানে বা শপিংমলে ঘুরে ঘুরে কেনাকাটা করার সময় খুব কম পায়। তাই ঘরে বসে অনলাইনে কেনাকাটা করতেই সবাই বেশি পছন্দ করে থাকে। আর যখন, পন্য অর্ডার করার সর্বোচ্চ কম সময়ের মধ্যেই তা ক্রেতার দারগোড়ায় পৌঁছে যাচ্ছে, তবে কেন বাজারে ঘোরাঘুরি করবে? বাংলাদেশে এখনও সাধারণ সাইনবোর্ড, ব্যানার কিংবা সাধারণ বিলবোর্ডের মাধ্যমেও মার্কেটিং করা হয়।
কিন্তু অপরদিকে আমরা দেখতে পাই, জাপানের টোকিও শহরে কিংবা নিউওয়ার্কের টাইমস স্কোয়ারে বা চায়নাতে অত্যাধুনিক থ্রিডি বিলবোর্ড ব্যবহার করা হয় অ্যাডভারটাইজমেন্ট করার জন্য। এতে করে খুবই অল্প সময়ের মধ্যে মানুষের সাথে ঐ ওয়ান্ট টু ওয়ান সম্পর্কটা গড়ে উঠছে। উন্নত কোম্পানিগুলো কাড়িকাড়ি টাকা খরচ করছে ডিজিটাল মার্কেটিং এর পিছনে তাদের ব্যবসাকে আরো উন্নত করার জন্য। ডিজিটাল মার্কেটিং কি এবং এর গুরুত্ব কতটা তা তারা বোঝে। কথায় আছে, প্রচারেই প্রসার। ব্যবসা সফল হওয়ার পিছনে মার্কেটিং এর গুরুত্ব অপরিসীম। আর মার্কেটিং সফল হওয়ার জন্য দর্শককে আকর্ষিত করাটাও অপরিহার্য। তাই অ্যাডভার্টাইজমেন্ট যত বেশি জাকজমকপূর্ণ এবং আকর্ষণীয় হবে দর্শক তত বেশি আকৃষ্ট হবে।
বর্তমানে কেউ কারো থেকে পিছিয়ে থাকতে চায় না। সবাই প্রতিযোগিতার সাথে ব্যবসা করছে এবং মার্কেটিং এর বিভিন্ন ধরন কাজে লাগাচ্ছে। আমরা বিভিন্ন সার্ভে থেকে জানতে পারি, বিশ্বের প্রায় ৫.১১ বিলিয়ন মানুষ সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে, আর এর মধ্যে এর প্রায় ৫১ শতাংশ ক্রেতা অনলাইন থেকে কেনাকাটা করে। বিশ্বের প্রায় ৭০শতাংশ ক্রেতা যে কোন পন্য কেনার আগে ইন্টারনেটে ভালোভাবে যাচাই-বাছাই করে, অপরদিকে ৮৪শতাংশ মার্কেটার বা বিক্রেতারা, সোশ্যাল মিডিয়ার কে ব্যবহার করে শুধুমাত্র ক্রেতাদের তথ্য সংগ্রহ করার জন্য। এত বিপুল সংখ্যক ক্রেতাদের অনলাইন উপস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে ব্যবসার প্রচার প্রসার খুব তাড়াতাড়ি বৃদ্ধি করা যায়। এতে করে খুব অল্প সময়ের মধ্যে আপনার ব্যবসা বা পণ্য বা সেবা সম্পর্কে অসংখ্য লোকেরা জেনে নিতে পারে।
আর তাই ব্যবসার উন্নতি সাধন হতে বেশি সময় লাগে না। ইন্টারনেট পরিষেবা ব্যবহার করে যে কোন ইলেকট্রনিক ডিভাইসের মাধ্যমে একসাথে অনেক ক্রেতার কাছে বিজ্ঞাপন পৌঁছানো যায়। একমাত্র এই ডিজিটাল মার্কেটিংই পারে আপনাকে সশরীরে উপস্থিত না করেও বিশ্বের সামনে আপনাকে উপস্থিত করতে। অনলাইন সেবা ব্যবহার করে ডিজিটাল মার্কেটিং আপনাকে এবং আপনার ক্রেতাদের মাঝে সম্পর্ক গড়ে তোলে। আপনি সহজেই তাদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করতে পারেন এবং তাদের পছন্দ বা চাহিদা সম্পর্কে খুব সহজেই ধারণা নিতে পারেন। আর মনে রাখতে হবে, দর্শক থেকেই ক্রেতার উৎপত্তি। তাই দর্শকদের সাথে ভালো যোগাযোগ এবং সম্পর্ক রাখাটা অনেক জরুরী।
একমাত্র ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমেই আপনি কম খরচে এবং কম সময়ে অধিক সংখ্যক ক্রেতা বা দর্শক পেয়ে থাকবেন। আর এই কারণেই ডিজিটাল মার্কেটিং এর গুরুত্ব এবং প্রয়োজনীয়তা বলে শেষ করা যাবে না। বর্তমানে আপনি আপনার সুবিধামতো বা আপনার ব্যবসায়ের ধরণ অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের ডিজিটাল মার্কেটিং করতে পারেন। যেমন, যেসব জায়গায় ডিজিটাল যুগের ছোঁয়া একটু কম বা প্রত্যন্ত অঞ্চলে অথবা মরুভূমির কোন রাস্তায় সাধারণ সাইনবোর্ডের মাধ্যমে বা সাধারণ বিলবোর্ডের মাধ্যমে ও মার্কেটিং করা যায়। ডিজিটাল মার্কেটিং প্রক্রিয়াকে সঠিকভাবে কাজে লাগানোর জন্য একজন মার্কেটার কে অবশ্যই দক্ষ হতে হবে। এখন বলবো ডিজিটাল মার্কেটিং এর বিভিন্ন ধরন সম্পর্কে।
ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্রকারভেদ
১) সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (SEO)
২) পে পার ক্লিক (PPC)
৩) কনটেন্ট মার্কেটিং (Content Marketing)
৪) ইমেইল মার্কেটিং (Email Marketing)
৫) ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং (Influencer Marketing)
৬) অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং (Affiliate Marketing)
৭) সি পি এ মার্কেটিং (CPA Marketing)
৮) ভিডিও মার্কেটিং (Video Marketing)
৯) সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং (SEM)
১০) সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং (SMM)
১) সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন: বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় মার্কেটিং স্ট্রাটেজি হচ্ছে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন। সহজ ভাবে বললে, ওয়েবসাইটকে এমন ভাবে সাজানো হয় যেখানে সার্চ ইঞ্জিন গুলো জানতে পারে আপনার কন্টেন্টে কি রয়েছে এবং যারা সার্চ করছেন তাদের কিওয়ার্ড এর সাথে ম্যাচ করে সাইট কে অপটিমাইজ করাই হচ্ছে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন। যখন আমরা গুগলে কোন কিছু লিখে সার্চ দিই গুগল তখন আমাদের সামনে কিছু ওয়েবসাইটের লিস্ট নিয়ে হাজির হয়। একটি রেজাল্ট পেজে ধারণত ১০ টি রেজাল্ট থাকে।
বেশিরভাগ লোকই প্রথম পেজে তাদের কাঙ্খিত বিষয় না খুজে পেলে দ্বিতীয় পেজে না যেয়ে পুনরায় সার্চ করে। তাই সবাই প্রথম পেজের ১০ রেজাল্ট এর মধ্যেই থাকতে চায়। আর বিশ্বের লক্ষ লক্ষ ওয়েবসাইটের সাথে পাল্লা দিয়ে প্রথম পেজে থাকাটা অনেক কঠিন ব্যাপার। তাই সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের কাজই হলো ওয়েবসাইট কে সার্চ রেজাল্টের শুরুর দিকে রাখা।
২) পে পার ক্লিক: পে পার ক্লিক হচ্ছে ডিজিটাল মার্কেটিং পদ্ধতির মধ্যে অন্যতম। যেখানে বিজ্ঞাপনদাতারা প্রতিবার তাদের বিজ্ঞাপনগুলির যে কোনটিতে ক্লিক করার উপরে একটি ফি প্রদান করে। অর্থাৎ, বিজ্ঞাপনদাতা তার পণ্য বা সেবা বিক্রি করার জন্যে যখন অনলাইন অ্যাড দিয়ে থাকে, তাতে একজন ভিজিটরের প্রতিবারের ক্লিকের জন্যে বিজ্ঞাপনদাতারা সার্চ ইঞ্জিন বা ওয়েবসাইট মালিকদের কে প্রতি ক্লিক এর ভিত্তিতে পেমেন্ট করে। তাকেই পিপিসি বা পে পার ক্লিক অ্যাডভার্টাইজিং বলে।
এই পদ্ধতির মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দেখানোর জন্য বিভিন্ন অ্যাড ফরম্যাট রয়েছে, যেমন সার্চ অ্যাড, ডিসপ্লে অ্যাড, লোকাল সার্চ অ্যাড, এবং রিমার্কেটিং অ্যাড। পিপিসি মার্কেটিং এর মাধ্যমে মার্কেটাররা তাদের টার্গেট অডিয়েন্সের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারেন এবং প্রচার প্রসার করতে পারেন।
৩) কনটেন্ট মার্কেটিং: কনটেন্ট হলো এক ধরনের ব্লগ পোস্ট। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ম্যাগাজিনে, অনলাইন পত্রিকায় অথবা ব্লগ সাইটে প্রমোশনাল ব্লগ লেখে। সেসব ব্লগ পড়ে মানুষজন ওই প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে জানতে পারে। এগুলোই হলো কন্টেন্ট মার্কেটিং। নিজের পণ্য বা সেবা সম্পর্কে মানুষজনকে জানানোর জন্য এরকম মার্কেটিং এখন বেশ কার্যকরী। যদি কোন কারনে আপনার লেখা সম্ভব না হয় তাহলে কোন পেশাদার ব্লগ লেখককে দিয়েও লিখে নিতে পারেন।
৪) ইমেইল মার্কেটিং: ইমেইলের মাধ্যমে মার্কেটিং করার পদ্ধতিকেই ইমেইল মার্কেটিং বলে। তবে আমাদের দেশের থেকে বাইরের দেশে ইমেইল মার্কেটিং খুব জনপ্রিয়। এখানকার মানুষ যেমন প্রতিনিয়ত মেসেঞ্জারের মেসেজ চেক করে ঠিক তেমনি বাইরের দেশগুলোতে মেইল চেক করা হয়। ইমেইল মার্কেটিং এর মাধ্যমে ক্রেতাদের সাথে ভালো সম্পর্ক স্থাপন করা যায়। ইমেইলের মাধ্যমে কোম্পানির প্রচার এবং বিভিন্ন অফার সম্পর্কেও তথ্য প্রদান করা সম্ভব হয়।
৫) ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং: বর্তমানে ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং খুব বেশি দেখা যাচ্ছে। এর মূল বিষয় হলো, এমন কাউকে দিয়ে পণ্যের অ্যাড দেওয়া যারা মানুষজনের কাছে খুব পরিচিত বা প্রিয়। হতে পারে কোন নামকরা খেলোয়াড়, কণ্ঠশিল্পী কিংবা অভিনেতা। যাদের বিজ্ঞাপন দেখে মানুষ বিশ্বাস করে ওই পণ্যের গুনগত মান সম্পর্কে। মূলত এই ধরনের মানসিকতা তৈরির লক্ষই হল ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং।
৬) অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং: সহজ কথায় বলতে গেলে, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হলো আপনার পন্য যখন অন্য কাউকে দিয়ে সেল করবেন তখন ওই পন্য প্রতি আপনি তাকে কিছু কমিশন দিবেন, আর এটাই হলো এফিলিয়েট মার্কেটিং। আরো সহজে বললে অন্যকে রেফার করার মাধ্যমে যে মার্কেটিং করা হয় তাকে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বলে। এখানে যারা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে থাকেন তাদের নিজস্ব কোন প্রোডাক্ট থাকে না বরং অন্যের প্রোডাক্ট বিক্রি করে থাকেন। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হল ডিজিটাল মার্কেটিং এর সবচেয়ে আলোচিত এবং কার্যকারী পদ্ধতি গুলোর মধ্যে একটি।
৭) সিপিএ মার্কেটিং: ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা হলো সিপিএ মার্কেটিং। যেখানে পণ্য উৎপাদনকারী বা সেবাদানকারী একটি প্রতিষ্ঠান অন্য আরেকজন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সাথে বিজ্ঞাপনের জন্য চুক্তি করে। চুক্তি অনুযায়ী ওই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বিজ্ঞাপন করে থাকে এবং বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে যদি তার দর্শকদের দ্বারা পণ্য ক্রয় করাতে পারে অথবা অন্য কোনো নির্দিষ্ট কাজ সম্পন্ন করাতে পারে তবেই সে টাকা পায়। এটাই হল সিপিএ মার্কেটিং বা “কস্ট পার অ্যাকশন”।
এটি হতে পারে, কোনো ভিডিও দেখা বা একটি লিঙ্কে ক্লিক করা, ফরম পূরণ করা, বা পণ্য ক্রয় করা ইত্যাদি। সিপিএ মার্কেটিং এর মাধ্যমে কাজ করার জন্য প্রথমে একটি নির্দিষ্ট ক্যাটাগরি বেছে নিতে হয় এবং সেই ক্যাটাগরির উপর ভিত্তি করে একটি অফার প্রমোট করতে হয়। এজন্য আপনার যদি একটি নিজস্ব ওয়েবসাইট থাকে এবং অনেক ই-মেইল কালেকশনে থাকে তাহলে খুব সহজেই সিপিএ মার্কেটিং করতে পারবেন।
৮) ভিডিও মার্কেটিং: ভিডিও মার্কেটিং হলো ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটি অন্যতম অংশ। মানুষ এখন যে কোন পণ্য সরাসরি ভিডিওতে দেখতে পছন্দ করে। আর ভিডিওতে পণ্য সম্পর্কে বিস্তারিত দেখানো এবং বোঝানো যায় তাতে করে গ্রাহকের আগ্রহ বৃদ্ধি পায়। এই কারনে এটি একটি কার্যকারী মার্কেটিং পদ্ধতি। ভিডিওর মাধ্যমে দর্শক এবং গ্রাহকের সাথে ভালো সম্পর্ক গড়ে ওঠে। টেক্সট বা ইমেজ থেকে ভিডিওর উপর জনগণের আস্থা বেশি থাকে। তাই পণ্যের প্রচার-প্রসার করার জন্য অবশ্যই ভিডিও মার্কেটিং করা উচিত।
৯) সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং: সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং হলো ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটি বহুল জনপ্রিয় পদ্ধতি। ডিজিটাল এই যুগে আপনার ব্যবসার বৃদ্ধির বা প্রচারের সব থেকে উত্তম উপায় হল সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং। সহজে বলতে গেলে, ওয়েবসাইটের ট্রাফিক জেনারেট করার জন্য বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিন গুলোতে যে পদ্ধতি ব্যবহার করে ওয়েবসাইটের মার্কেটিং করা হয় তাকে সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং বলে। সার্চ ইঞ্জিনগুলোর মধ্যে রয়েছে গুগল, ইয়াহু, বিং ইত্যাদি। সার্চ ইঞ্জিন রিলেটেড দুইটি টার্ম আছে। টার্ম দুইটি হচ্ছেঃ-
পেইড – পেইড বলতে বোঝানো হয় গুগলের সার্চ পেজের প্রথমে আসতে সার্চ ইঞ্জিনের মালিকদেরকে টাকা দিতে হয়। সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং এর পেইড ভার্সন গুলো বেশি দেখা যায়। আপনি খেয়াল করবেন গুগলে কোনো কিওয়ার্ড লিখে সার্চ দিলে কিছু কিছু কিওয়ার্ড এর পাশে (ad) লেখা থাকে। যত বেশি টাকা খরচ করা হবে ওয়েবসাইটটি সার্চ ইঞ্জিনে তত বেশি উপরে থাকবে। এভাবেই গুগল পেইড মার্কেটিং এর সুযোগ দিয়ে থাকে। তবে এক্ষেত্রে নিশ্চিত আপনি ভিজিটর পাবেনই।
আানপেইড- এ প্রসেসে কোন প্রকার অর্থ খরচ করতে হয় না। ওয়েব সাইটে বিশেষ কিছু কাজ করিয়ে গুগলে র্যাংক করানো কে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বলে।
১০) সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং: বর্তমান সময়ে ডিজিটাল মার্কেটিং এর সবচেয়ে সহজ এবং জনপ্রিয় দিক হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং। এখন মানুষ সবচেয়ে বেশি সময় ব্যয় করে সোশ্যাল মিডিয়াতে। সে কারণেই ব্যবসায়ী বা সেলারদের উপযুক্ত স্থান হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়া। একদম কম খরচে অডিয়েন্স এর কাছে পৌঁছানোর সহজ উপায় হল সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং। সোশ্যাল মিডিয়া মানুষের হাতে হাতে এমন ভাবে পৌঁছেছে যে মানুষ এ ছাড়া কিছুই বোঝে না। তাইতো সারাদিন পড়ে থাকে ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউবের মধ্যে।
এই সুযোগে যদি আপনি আপনার পণ্য বা সার্ভিসটাকে সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেন তাহলে তা খুব সহজেই, মুহূর্তের মধ্যে লক্ষ লক্ষ দর্শক বা কাস্টমারদের কাছে পৌঁছে যাবে। এতে করে লোকজন খুব সহজেই আপনার প্রোডাক্ট সম্পর্কে জানতে পারবে এবং তা কিনতে আগ্রহী হবে। আর আপনার সেল বেশি পরিমাণে জেনারেট হবে,ফলে আপনি লাভবান হতে থাকবেন। এজন্য সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করা উচিত ।অনলাইন মার্কেটিং এর এক বিরাট অংশ দখল করে নিয়েছে এই সোশ্যাল মিডিয়া। কয়েকটি জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়ার কথা এখানে বলবো।
- YouTube
YouTube: ইউটিউব এমন একটা সোশ্যাল মিডিয়া যেখানে আপনাকে কাস্টমার বা দর্শকদের সাথে ওয়ান টু ওয়ান সম্পর্কটা সরাসরি তৈরি করে। ইউটিউব এর মাধ্যমে যদি আপনি মার্কেটিং করতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করতে হবে। আর আপনার পন্য বা সার্ভিসের ক্যাটাগরি অনুযায়ী সবকিছু বর্ণণা দিয়ে ভিডিও বানাতে হবে। ভিডিও গুলো অবশ্যই ভালো কোয়ালিটির হতে হবে যাতে কাস্টমাররা খুব সহজেই তা বুঝতে পারে। ইউটিউবের সবচেয়ে বড় সুবিধা হল, আপনি একটি ভিডিও আপলোড করলে যতদিন পর্যন্ত ভিডিওটি ইউটিউবে থাকবে ততদিন কাস্টমার আপনার প্রোডাক্ট সম্পর্কে জানতে পারবে। আর সেখান থেকে আপনার কাস্টমার জেনারেট হতে থাকবে।
Facebook: প্রতিদিন ১৬ থেকে ২৪ বছর বয়সী ফেসবুক ইউজাররা ফেসবুকে তাদের প্রয়োজনীয় জিনিস খুঁজে থাকে। ৬৫ ভাগ ফেসবুক ইউজাররা তাদের লোকাল বিজনেস পেজে সপ্তাহে একদিন হলেও চেক করে। এজন্য বিভিন্ন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলো ফেসবুকে তাদের মার্কেটিং কাজ করে থাকে। ফেসবুকে আপনাকে একটি বিজনেস অ্যাকাউন্ট করতে হবে এবং আপনাকে আপনার পণ্যের ক্যাটাগরি হিসেবে একটি পেজ তৈরি করতে হবে। সেখানে আপনার পণ্য সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা দিয়ে ছবি বা ভিডিও পোস্ট করতে হবে। এতে করে আপনার যে সকল কাস্টমার বা ফলোয়ার রয়েছে তাদের কাছে পৌছে যাবে।
Twitter: টুইটার কে আপনি ফেসবুকের মতোই ব্যবহার করতে পারেন। সেখানে একটি প্রোফাইল খুলে আপনি অডিও, ভিডিও বা টেক্সটের মাধ্যমে টুইটার ব্যবহারকারীদের কাছে আপনার পণ্য বা সেবা সম্পর্কে জানাতে পারেন। টেক্সট পোস্টের জন্য টুইটারের মেইন ওয়েবসাইটও ব্যবহার করতে পারেন। সবচেয়ে বড় কথা হলো, টুইটার অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর তুলনায় খরজ এবং সময় অনেক কম লাগায়।
Instagram: ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার করেও আপনি সহজেই ব্যবসায়িক প্রচার কাজ চালাতে পারেন। যেহেতু ইনস্টাগ্রাম ছবি বা ইমেজ রিলেটেড একটি সোশ্যাল মিডিয়া তাই আপনার পণ্যের ছবিগুলো সুন্দরভাবে তৈরি করে পোস্ট করতে পারেন। এতে করে ইনস্টাগ্রাম ইউজাররা আপনার পণ্য সম্পর্কে জানতে এবং তা কিনতে আগ্রহী হবে।
অফলাইন মার্কেটিং এর প্রকারভেদ
ডিজিটাল মার্কেটিং এর এত ভিড়ের মধ্যেও কিছু অফলাইন মার্কেটিং এখনো চলছে। যেগুলো স্থান ভেদে কাজে লাগানো যায়। যেমন, ট্রাফিক জ্যাম সমৃদ্ধ স্থানে যদি সাধারণ বিলবোর্ড বা ব্যানার বসানো যায়, এর মাধ্যমে বিশাল পরিমান একটা অডিয়েন্সের কাছে অতি কম খরচে অনেকদিন ধরে প্রচারণা চালানো যাবে। বিশেষ করে ইলেকট্রনিক পন্য সেলাররা এটি ব্যাবহার করে থাকেন। এছাড়াও কিছু অফলাইন মার্কেটিং রয়েছে। যেমন :
- রেডিও মার্কেটিং
- টেলিভিশন মার্কেটিং
- ফোন মার্কেটিং
- বিলবোর্ড মার্কেটিং
রেডিও মার্কেটিং: রেডিওর সাথে অনেক পুরোনো স্মৃতি রয়েছে।রেডিওতে সরাসরি লাইভ টেলিকাস্ট এর ঘটনা প্রায় ১০০ বছরের পুরানো। আপনি হয়তো ভাবছেন এত পুরনো জিনিস কেন এই ডিজিটাল যুগে টেনে আনলাম? আপনি জানলে অবাক হবেন যে,মার্কিন অধিবাসীদের প্রায় ৮৫ শতাংশ লোকই দৈনিক প্রায় ২ ঘণ্টা করে রেডিও শুনে থাকে। এখনো বিশ্বে রেডিওতে অ্যাড দেওয়ার জন্য যা খরচ হয় তার ৪০ শতাংশ খরচ শুধু আমেরিকাতেই হয়। এছাড়াও আমেরিকার মোট জনসংখ্যার অর্ধেক লোকই অন্তত মাসে একদিন রেডিও শোনে।
টেলিভিশন মার্কেটিং: যদিও টেলিভিশনে সবাইকে উদ্দেশ্য করে অ্যাড দেওয়া হয়। এখানে কোন টার্গেটেড অডিয়েন্সের জন্য শুধু অ্যাড দেওয়া যায় না। কিন্তু ডিজিটাল মার্কেটিং এর অন্য সব সেক্টরে মানুষের চাহিদা অনুযায়ী অ্যাড শো করা হয়। এতকিছুর পরেও টেলিভিশন মার্কেটিং অ্যাডভার্টাইজিং এর এক বিরাট অংশ ধরে আছে।
ফোন মার্কেটিং: ফোন মার্কেটিং কি তা আপনি খুব সহজে বুঝতে পারবেন। কারণ, আমরা সবাই জানি সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বিভিন্ন ফোন কোম্পানিরা তাদের প্যাকেজ, অফার ইত্যাদি সম্পর্কে আমাদেরকে মেসেজ করে থাকে। কোম্পানির মেসেজ দেখতে দেখতে হয়রান হয়ে যেতে হয়। অনেক সময় ফোন কোম্পানি থেকে কলও দেয়া হয়। আর এই সব কিছুই ফোন মার্কেটিং এর আওতাভুক্ত।
বিলবোর্ড মার্কেটিং: জনবহুল রাস্তার মোড় কিম্বা ট্রাফিক জ্যাম এলাকায় বড় পর্দায় সাধারণ বা ইলেকট্রিক বিল বোর্ড দেখা যায়। এছাড়াও স্কুল, কলেজ, হসপিটাল বা লোকোসমাগমের স্থানে ব্যানার, বিলবোর্ড দেখা যায়। এগুলোকেই বিলবোর্ড মার্কেটিং বলা হয়।
ডিজিটাল মার্কেটিং এর ভবিষ্যৎ
ডিজিটাল মার্কেটিং এর ভবিষ্যৎ অনেক ভালো। সাধারণত আমাদের সমাজে এমন কিছু মানুষ রয়েছে যারা ডিজিটাল মার্কেটিং কে তেমন কোন গুরুত্বপূর্ণ কাজ মনে করে থাকে না। সাধারণত এইসব ব্যক্তি মনে করে এই কাজের তেমন কোনো গুরুত্ব নেই। তবে আসলে কি বিষয়টি এরকম? যদি আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং কে আপনার পেশা হিসেবে গ্রহণ করতে চান তাহলে অবশ্যই এর ভবিষ্যৎ সম্পর্কে জেনে রাখতে হবে। বর্তমান সময় হচ্ছে ইন্টারনেটের সময়। আমাদের মধ্যে বেশিরভাগ মানুষ রয়েছে যারা ইন্টারনেট এর সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে থাকি।
আর বাংলাদেশ সহ বিশ্বের যে সকল ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান রয়েছে তারা এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীদের টার্গেট করে তাদের কাছে পণ্যের বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকে। সাধারণত এভাবেই একটি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা জানতে পারে।শুধু মাত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ধরনের বিজ্ঞাপন দেওয়া হয় এমনটা নয়। আরো বেশ কিছু প্ল্যাটফর্ম রয়েছে যেগুলোতে প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়ে থাকে। যেহেতু সময় আরো পরিবর্তন হচ্ছে এবং আমরা আরো বেশি ডিজিটাল হচ্ছি তাই ডিজিটাল মার্কেটিং এর চাহিদা তত বেশি বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তাই এমনটা ভাবার সুযোগ নেই যে ভবিষ্যতে ডিজিটাল মার্কেটিং এর চাহিদা থাকবে না। আমাদের যুগ যতটা ডিজিটাল হচ্ছে ডিজিটাল মার্কেটিং করার ধারণা পরিবর্তন হচ্ছে। আজকাল ছোট-বড় সব ধরনের প্রতিষ্ঠান গুলো তাদের পণ্যের বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য ডিজিটাল মার্কেটিং এর আশ্রয় নিয়ে থাকে। এর ফলে তারা বাংলাদেশসহ বিশ্বের আরো বিভিন্ন দেশের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের তাদের পণ্য সম্পর্কে জানাতে পারে। তাই এই বিষয়ে আমরা নিশ্চিত থাকতে পারি যে, ডিজিটাল মার্কেটিং এর ভবিষ্যৎ খুব ভালো।
ডিজিটাল মার্কেটিং কি হালাল?
ডিজিটাল মার্কেটিং কি হালাল? অনেকের মনে এই প্রশ্ন জাগে। সাধারণত ডিজিটাল মার্কেটিং হল বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে কোন ব্যবসার পণ্য বা সেবার প্রচার কাজ চালানো। অর্থাৎ, মানুষকে আপনার তৈরি করা পণ্য বা সেবা সম্পর্কে জানানো।
ডিজিটাল মার্কেটিং কি হালাল নাকি হারাম এই বিষয়টি নির্ভর করে আপনি কোন ধরনের পণ্য বিক্রি করছেন তার ওপরে। কারণ বেশ কিছু পণ্য রয়েছে যেগুলো মানুষের জন্য ক্ষতিকর সাধারণত এগুলোকে আল্লাহতালা হারাম করেছেন। এখন আপনি যদি হারাম কোনো ধরনের পণ্যের মার্কেটিং বা প্রচার করেন তাহলে সেই ডিজিটাল মার্কেটিং হারাম হবে। অথবা আপনি হালাল পণ্য বিক্রি করছেন কিন্তু, বিজ্ঞাপনের ভেতরে অশ্লীল দৃশ্য কিংবা যেগুলো ইসলামে নিষিদ্ধ করা হয়েছে এ ধরনের কাজ করছেন তাহলে সেই ডিজিটাল মার্কেটিং হারাম হবে।
আবার আপনি যদি কোন হালাল পণ্যের বিজ্ঞাপন করেন অর্থাৎ, আপনার পণ্যটি মানুষের কাছে ছড়িয়ে দেন ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে। তাহলে অবশ্যই এ মার্কেটিং হালাল হবে। তাই আপনি ভালোভাবে জানেন যে আপনার পণ্য কোন ধরনের।
এ বিষয়টি সম্পূর্ণ আপনার উপর নির্ভর করে। আপনি কোন ধরনের পণ্য বিক্রি করছেন এবং কি ধরনের বিজ্ঞাপন তৈরি করে সেটিকে মানুষের কাছে প্রচার-প্রচারণা করছেন সাধারণত তার ওপর নির্ভর করে আপনার পণ্য অর্থাৎ আপনার এই ডিজিটাল মার্কেটিং করা হালাল অথবা হারাম। এ বিষয়ে বিভিন্ন আলেমের বিভিন্ন রকমের মতবাদ রয়েছে তাই একজন জ্ঞানীগুণী আলেমের পরামর্শ নিয়ে নেবেন।
আমাদের শেষ কথা
ডিজিটাল মার্কেটিং কি? আশা করছি এ বিষয়ে আপনি একটা পরিষ্কার ধারণা পেয়েছেন। কমবেশি আমরা সবাই “ডিজিটাল মার্কেটিং” এই শব্দটির সাথে পরিচিত। কারণ ডিজিটাল যুগে বাস করে ডিজিটাল না হয়ে তো আর উপায় নেই। যুগের সাথে মিল করে ব্যবসা চালাতেহলে এই উন্নত মার্কেটিং ব্যবস্থা করতেই হবে। আপনি আপনার সুবিধামতো বা পন্যের ক্যাটাগরি অনুযায়ী যেকোনো ধরনের ডিজিটাল মার্কেটিং করতে পারেন।কারণ এই ডিজিটাল মার্কেটিং করার মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই আপনার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানকে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারবেন। এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ এবং তথ্যমূলক আর্টিকেল যদি নিয়মিত পড়তে চান তাহলে আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করতে থাকুন। কারণ এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল আমরা “ডিজিটাল মার্কেটিং কি” ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে থাকি।